পড়াশোনা বন্ধ রেখে দেদার মাইক বাজিয়ে বিদ্যালয়ে 'দিদির সুরক্ষা কবচ' অনুষ্ঠান, প্রশ্নের মুখে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন মাইক-বক্স বাজিয়ে সভা মিটিং বন্ধের নির্দেশ রাজ্যে। রাজ্য সরকারের সেই নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলল দেদার নাচগান, হইহুল্লোড়!

পড়াশোনা বন্ধ রেখে দেদার মাইক বাজিয়ে বিদ্যালয়ে 'দিদির সুরক্ষা কবচ' অনুষ্ঠান,  প্রশ্নের মুখে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: স্কুলে ক্লাস বন্ধ রেখে চলল দেদার নাচ-গান, হুল্লোর ও খাওয়া-দাওয়া। তৃনমূলের অনুষ্ঠানে দর্শক হল স্কুলের শিক্ষক থেকে খুদে পড়ুয়ারা। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন মাইক-বক্স বাজিয়ে সভা মিটিং বন্ধের নির্দেশ রাজ্যে। কিন্তু এখানে সেই নির্দেশ পালন তো দূরের কথা, দেখা গেল প্রাথমিক স্কুলের ক্লাস বন্ধ রেখে তৃণমূলের সুরক্ষা কবজ প্রোগ্রামে, নাচ গান সঙ্গে নেতাকর্মীদের দেদার খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করতে। যদিও ঘড়ির কাঁটায় ১১টা বাজতেই প্রোগ্রাম চলাকালীন মঞ্চ থেকে উঠে যেতে দেখা যায়, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মদক্ষ্যকে। এদিকে সাংবাদিকরা তাঁকে এই বিষয়ে  জিজ্ঞাসা করলে প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি।  স্কুল চলাকালীন দিদির সুরক্ষা কবজ কর্মসূচি উদযাপনের এই ছবি ধরা পড়ল মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার বড়ঞা ব্লকের নীমা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। 

জানা গিয়েছে, আজ ছিল বড়ঞা ২ দুই নম্বর অঞ্চলে দিদি সুরক্ষা কবজ কর্মসূচির নির্ধারিত দিন। সেই মতই ওই অঞ্চলের নিমা গ্রামে প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শনের কথা ছিল তৃণমূল বিধায়কের। তবে শিক্ষকদের কথায়, সেই সময় ছিল সকাল ৯টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত। কিন্তু এগারোটা পেরিয়ে গেলেও কার্যত স্কুলের ক্লাস বন্ধ করেই মাইক বক্স বাজিয়ে নাচ গান হুল্লোর চলল স্কুলে। আর যা রীতিমত বসে বসে দেখলেন স্কুলের শিক্ষক থেকে ছাত্রছাত্রী ও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মদক্ষ। বিধায়ক ব্লক সভাপতি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মদক্ষ সহ পুরো ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বরা।

এদিকে সকাল ১১টার পরও কীভাবে বিদ্যালয়ে পড়াশোনা বন্ধ রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি চলছে? তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জানা গিয়েছে, ক্লাস বন্ধ নিয়ে শিক্ষকদের কাছে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হলে,  হুঁশ ফেরে তৃণমূল নেতৃত্ব সহ স্কুল কর্তৃপক্ষের। সাংবাদিকদের দেখে তড়িঘড়ি মাঝখানে আসর বন্ধ করলেও অনেকেই আবার ক্ষিপ্ত হয়ে বেরিয়ে যান। এদিকে সাংবাদিকদের ক্যামেরার ভয়ে মাঝখানে আসর বন্ধ করে শুরু হয় খাওয়া-দাওয়ার পর্ব। এদিন বেলা প্রায় সাড়ে বারোটা পর্যন্ত চলে তৃণমূল নেতৃত্বদের খাওয়া-দাওয়ার পর্ব স্কুলের মিড ডে মিলের ঘরে। তৃণমূল নেতৃত্বদের খাবার তৈরি করতে ব্যস্ত মিড ডে মিল কর্মীরা সঙ্গে চলছে মিড ডে মিলের রান্নাও। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেন বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। তিনি বলেন, ''সকাল 11 টা পর্যন্ত প্রোগ্রাম হয়েছে। তারপর তাদের কোনও প্রোগ্রাম হয়নি।'' যদিও শিক্ষকদের কাছে একই প্রশ্ন করা হলে শিক্ষকরা প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চান। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। গোটা ঘটনাকে নজিরবিহীন ঘটনা বলে দাবি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের।