'ক্ষমতা থাকলে ভোটে দাঁড়ান', বোসকে আক্রমণ মমতার

বর্তমান উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন একাধিক ইস্যুতে রাজ্য বনাম রাজভবন সংঘাত ছিল তুঙ্গে। তবে রাজ্যপাল বোসের ক্ষেত্রে শুরুর দিকে নবান্ন-রাজভবনের সম্পর্ক বেশ ভালোই ছিল।

'ক্ষমতা থাকলে ভোটে দাঁড়ান',  বোসকে আক্রমণ মমতার
(ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ ইস্যুতে রাজভবন ও নবান্নের সংঘাত তুঙ্গে। বুধবার ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সি ভি আনন্দ বোসকে বেনজির তোপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

 রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালকে আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ''রাজ্যপালের কাজ সংবিধানে সীমাবদ্ধ করা আছে। গায়ের জোরে রাজ্য কিনে নিতে পারেন না। বলছে মুখ্যমন্ত্রী যা করছে আমিও তাই করছি। আপনি তাহলে দল তৈরি করুন। ভোটে জিতে আসুন। বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ান। যদি জিততে পারেন। ১০০ বছরেও হবে না।  আপনার সৎ সাহস থাকলে বিধানসভায় শিক্ষা সংক্রান্ত যে বিলটা তৈরি হয়েছে, সেটা পাশ করিয়ে দিন।'' 

এদিন ঝাড়গড়ামেড় সভামঞ্চ থেকে একাধিক ইস্যু নিয়ে রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ শানান TMC সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন, ''রাজ্যপালের কাজ সাংবিধানিক। তিনি সব কাজ করতে পারেন না। রাজ্যপাল গায়ের জোর দেখিয়ে কাজ করছেন। ইচ্ছামত ভিসি নিয়োগ করছেন তিনি। ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, রেজিস্ট্রার কেউ নেই। সেখানে কিছু করছেন না। কালো চশমা পরে কেরালা থেকে লোক আনিয়ে এইসব করছেন তিনি। জঙ্গলমহলে আমরা শান্তি ফিরিয়ে এনেছি। এখন জঙ্গলমহলবাসী অনেক ভালো আছেন। ঝাড়গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছি আমরা। আর আমাদের রাজ্যপাল কালো চশমা পরে জ্ঞান দিয়ে বেড়াচ্ছেন। আমরা পাঠালেও ফাইলে সই করেন না। অথচ কেরল থেকে নিয়ে এসে উপাচার্য করে দিচ্ছে। মনে রাখতে হবে উপাচার্য হতে গেলে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। আলিয়ায় একজনকে ভিসি করেছেন যার শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও অভিজ্ঞতা নেই। ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে না আছেন উপাচার্য, আর না আছেন রেজিস্ট্রার। সার্টিফিকেট পর্যন্ত দেওয়া যাচ্ছে না কাউকে। আমি মুখ্যসচিবকে অনুরোধ করছি ব্যবস্থা করার। আজই আমি উপাচার্য স্থির করব। আমি জানি উপাচার্য করতে গেলে ৩টি নাম পাঠাতে হয়।'' 

শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল C.V Anand Bose-কে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের সুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''রাজ্য বিধানসভায় যে বিলটি পাশ হয়েছে সৎ সাহস থাকলে তাতে সই করে দিন। ছাত্রছাত্রীদের ডেকে বলছে দুর্নীতি, দাঙ্গা কাকে বলে। এটা রাজ্যপালের কাজ? না রাজ্যপালের কাজ সংবিধানে সীমাবদ্ধ করা আছে। গায়ের জোরে রাজ্য কিনে নিতে পারেন না। বলছে মুখ্যমন্ত্রী যা করছে আমিও তাই করছি। আপনি তাহলে দল তৈরি করুন। ভোটে জিতে আসুন। বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ান। যদি জিততে পারেন। ১০০ বছরেও হবে না।'' 

উল্লেখ্য, দেশের বর্তমান উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন একাধিক ইস্যুতে রাজ্য বনাম রাজভবন সংঘাত ছিল তুঙ্গে। তবে রাজ্যপাল বোসের ক্ষেত্রে শুরুর দিকে নবান্ন-রাজভবনের সম্পর্ক বেশ ভালোই ছিল। রাজ্যপালের 'হাতেখড়ি' অনুষ্ঠানে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা যায় রাজভবনে। তবে তারপর থেকেই সম্পর্কের অবনতি ঘটে।