আবাস যোজনায় আশাকর্মীর নাম, স্বজনপোষণের অভিযোগে উত্তাল এলাকা

যারা প্রকৃত গরিব মানুষ, কাঁচা বাড়িতে বসবাস করেন সেই সমস্ত প্রান্তিক পরিবারগুলির অনুসন্ধান পত্রে ভুল তথ্য দিয়ে তাদেরকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চক্রান্ত করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

আবাস যোজনায় আশাকর্মীর নাম, স্বজনপোষণের অভিযোগে উত্তাল এলাকা

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: একে আশাকর্মী। তার উপর নিজের রয়েছে পাকা দালান বাড়ি। তা সত্ত্বেও আবাস যোজনার তালিকায় রীতিমতো জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে তুমুল উত্তেজনা। নিজের পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনার তালিকায় আশাকর্মীর নাম ওঠা নিয়ে রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ স্থানীয় বাসিন্দাদের। শুধু তাই নয়, আবাস যোজনায় স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে ওই আশাকর্মীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন নদীয়ার শান্তিপুর গয়েশপুর পঞ্চায়েতের টেংরিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দারা।

গয়েশপুর পঞ্চায়েতের টেংরিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আজেম শেখ, ভুলো শেখদের মতো ১৯ জন গৃহহীন প্রান্তিক পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও এবং জেলা শাসকের কাছে ওই আশাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেন বুধবার। তাদের অভিযোগ, ওই গ্রামেরই বাসিন্দা সোনাতাজ বেগম আশাকর্মীর কাজ করেন। সম্প্রতি আবাস যোজনায় অনুসন্ধানের  দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। তাদের ছাদ দেওয়া পাকা ঘর থাকা সত্ত্বেও, স্বামীর নামে সরকারি আবাস যোজনা ঘর মঞ্জুর করিয়েছেন তিনি। অভিযোগ, তাঁদের গ্রামেরই বেশকিছু বৃত্তবান ব্যবসায়ী ও পাকাঘর থাকা সত্ত্বেও টাকার বিনিময়ে তাদের নাম আবাস যোজনায় অন্তর্ভুক্ত করিয়ে দিয়েছেন ওই আশাকর্মী। 

শুধু তাই নয়, যারা প্রকৃত গরিব মানুষ, কাঁচা বাড়িতে বসবাস করেন সেই সমস্ত প্রান্তিক পরিবারগুলির অনুসন্ধান পত্রে ভুল তথ্য দিয়ে তাদেরকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চক্রান্ত করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সেই কারণেই স্থানীয় পঞ্চায়েত মহকুমা ও জেলা প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্তাদের দিয়ে যাচাই করা হোক। জানা গিয়েছে, সব তরফেই তাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে পুনরায় অনুসন্ধানের জন্য। এদিকে পঞ্চায়েত প্রধান তাদের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত সদস্য বা প্রধান উপপ্রধান এ বিষয়ে কখনও হস্তক্ষেপ করেনি। তবে মঙ্গলবার গ্রামসভায় অনুসন্ধানকারী ওই আশাকর্মী যে তালিকা প্রকাশ করে, তাতে দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তথ্যগত ভুল। তবে এ ব্যাপারে সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

এদিকে রাজ্যজুড়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির ও স্বজনপোষণের অভিযোগের শেষ নেই এবং এই নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা রাজ্য রাজনীতি অব্যাহত। জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৪০ হাজার নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকা থেকে বাতিল হতে চলেছে। প্রতি জেলার প্রশাসনিক দফতরে অভিযোগ বক্স বসেছে। যারফলে কার্যত পঞ্চায়েত ভোটের আগে আবাস দুর্নীতি নিয়ে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি।