চিনে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, কতটা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ভারতেও খোঁজ মেলা নতুন ভ্যারিয়েন্ট?

রাজ্যগুলিকে বলা হচ্ছে, করোনার জিনোম সিক্যুয়েন্সিং পরীক্ষা বাড়াতে। করোনা কোন পথে নিজের রূপ বদলাচ্ছে, সেই বিষয়ে নজরদারি চাইছে সরকার। এমতাবস্থায় ভারতে আবার নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়াবাড়ি আকার নেওয়ার আশঙ্কা কতটা? কী বলছেন বিশেষজ্ঞ?

করোনার সুনামি এসেছে চিনে । যে চিন থেকেই করোনা ভাইরাস গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল, সেখানেই ফের একবার হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ধীরে ধীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে আশেপাশের দেশগুলিতেও। আর এই কারণেই উদ্বেগে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই বুধবার দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই বৈঠকে ফের একবার মাস্ক পরা থেকে শুরু করে যাবতীয় কোভিডবিধি অনুসরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে বিকেল হতেই জানা গেল, চিনে করোনার যে ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত, তার খোঁজ ভারতেও মিলেছে। আক্রান্ত রোগীদের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, হঠাৎ সংক্রমণ বৃদ্ধির পিছনে দায়ী করোনার সাব ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭।  চিনের অধিকাংশ আক্রান্তের শরীরেই পাওয়া গিয়েছে এই সাব ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি।


সম্প্রতি All India Institute of Medical Sciences (AIIMS)-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর চিকিৎসক রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন  চিনে হুহু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। আগামী তিন সপ্তাহে চিনে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের ভয় কতটা? এই প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসক বলেছেন, করোনার বিরুদ্ধে ভারতীয়দের রোগ প্রতিরোধ শক্তি রীতিমতো জোরদার। তাই এখনই খুব আতঙ্কের কিছু নেই। তবে সাবধান থাকতেই হবে।

তাঁর কথায়, করোনা অতিমারি শুরুর পরে তিন বছর কাটতে চলেছে। এর মধ্যে বহু মানুষই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাঁদের করোনা সেরে গিয়েছে। ফলে তাঁদের প্রাকৃতিক উপায়েই রোগ প্রতিরোধ শক্তি তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া তাঁদের অনেকেরই এর মধ্যে করোনার টিকাও নেওয়া হয়ে গিয়েছে। ফলে করোনা এখন আর আগের মতো ভয়াবহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা খুব একটা নেই। এমনই মনে করছেন তিনি।


আল্ফা, বিটা, ডেল্টা এবং ওমিক্রন— করোনার নানা ধরনের রূপ ইতিমধ্যেই ভারতের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে করোনা নিজের রূপ আবারও বদলেছে। এবং উপসর্গগুলি এখন আগের চেয়ে অনেকটা কম প্রভাব ফেলার মতো হয়েছে। এমনই বলছেন তিনি। 

এই গোটা প্রক্রিয়ার জন্য তিনি করোনার একেবারে গোড়ার দিকের দিনগুলির কথা উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, সেই সময়ে বেশি মাত্রা সক্রিয় হয়ে দেশের সরকার এবং মানুষ করোনাকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে সেটিরই সুফল পাওয়া গিয়েছে। তাই করোনা এখন আর আগের মতো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারবে না বলেই তাঁর আশা।

তবে এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার এবং সে সম্পর্কে সচেতন থাকারও পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে সাবধান থাকাটা দরকার। হালে কেন্দ্রের তরফেও নতুন করে করোনা মোকাবিলার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।