শীতের শুরুতেই ফের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনা

নতুন করে আবার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। বছর শেষের আগে চিন, আমেরিকায় সংক্রমণ বাড়ছে।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব রাজেশ ভূষণ রাজ্যগুলিকে লেখা চিঠিতে বলেছেন, “সম্প্রতিই জাপান, আমেরিকা, রিপাবলিক অব কোরিয়া, ব্রাজিল ও চিনে যে হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আইএনএসএসিওজি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করতে জিনোম সিকোয়েন্সিং করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, নতুন ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করতে সাহায্য় করবে জিনোম সিকোয়েন্সিং। যদি দেশে কোনও করোনা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ে, তবে সেই সংক্রমণ রুখতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। উল্লেখ্য, ভারতের করোনার জিনোম কনসর্টিয়াম, যা INSACOG নামে পরিচিত, তার অধীনে ৫০টি ল্যাবরেটরিই জিনোম সিকোয়েেন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ অ্যাডিশনাল চিফ সেক্রেটরি, প্রিন্সিপাল সেক্রেটরি, প্রতিটা রাজ্য ও ইউনিয়ন টেরিটরির স্বাস্থ্য সচিবদের চিঠি লিখে জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশে করোনার যে-প্রজাতি রয়েছে, তার স্বভাববিধির উপর নজর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজেশ ভূষণ চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, ভারত ফাইভ-ফোল্ড- স্ট্র্যাটেজি মেনে করোনা মোকাবিলা করে এসেছে। এই স্ট্র্যাটেজি হল-- টেস্ট-ট্র্যাক-ট্রিট-ভ্যাক্সিনেসন আর কোভিডবিধি মেনে চলা। বর্তমানে দেশে এক সপ্তাহে ১২০০-র মতো কোভিড পজিটিভ কেস সামনে আসে।

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্যানেল জানিয়েছে, চিনের করোনা পরিস্থিতি বেগতিক হলেও এ নিয়ে ভারতের আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে চিনের কোভিড পরিস্থিতির উপর সর্বদা নজর রাখা হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে কোভিড ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ারম্যান এনকে অরোরা জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বিশ্বে বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ৩৫ লক্ষ নতুন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১২। দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৪৯০। অন্য়দিকে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, রবিবার রাজ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল শূন্য। সোমবার মাত্র একজন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হন।

রাজ্য তথা দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে একেবারে নিশ্চিন্ত হতে পারছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে চিঠি পাঠিয়ে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে সতর্ক করেছেন।

বিশ্বে এখনও প্রতি সপ্তাহে ১০ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে চিনের করোনা পরিস্থিতি ফের গোটা বিশ্বের কাছে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিনের বিভিন্ন হাসপাতালগুলিকে কোভিড রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়তে শুরু করেছে। বাড়ছে মৃত্যুমিছিলও। আগামী দিনে চিনের এই পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই অবস্থায় নতুন কোনও ভ্যারিয়েন্ট ভারতে ঢুকে পড়ছে কি না, তার উপর নজরদারি চালানো আরও বেশি প্রয়োজন বলে মনে করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সেই কারণে আক্রান্তের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের উপর আরও জোর দিতে বলা হয়েছে।