পদপৃষ্ট হয়ে নিহত ৩, জিতেন্দ্র তিওয়াড়ির বাড়িতে পুলিশ

সস্ত্রীক জিতেন্দ্র তিওয়ারি-সহ ১০জনের বিরুদ্ধে পুলিশের এফআইআর। অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করল আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ।

পদপৃষ্ট হয়ে নিহত ৩,  জিতেন্দ্র তিওয়াড়ির বাড়িতে পুলিশ

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির বাড়িতে পুলিশ। আসানসোলে শুভেন্দুর কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু মামলায় জিতেন্দ্র তিওয়ারির বাড়িতে যায় পুলিশ। এদিন জিতেন্দ্রর বাড়ি ছিল তালাবন্ধ! মূলত এই ঘটনায় সস্ত্রীক জিতেন্দ্র তিওয়ারি-সহ ১০জনের বিরুদ্ধে পুলিশে এফআইআর দায়ের হয়েছে। তবে এদিন বাড়িতে দেখা পাওয়া যায়নি সস্ত্রীক জিতেন্দ্র তিওয়াড়ির।  

কম্বল বিতরণকাণ্ডে পদপৃষ্টে মৃত্যুর ঘটনায় বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও তাঁর স্ত্রী চৈতালির বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় জিতেন্দ্র পত্নী চৈতালিকেও তলব করা হয়েছে। আসানসোল পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি তিওয়ারিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ। শুভেন্দুর অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে ৩জনের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৬ বিজেপি যুব মোর্চার নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও তাঁর স্ত্রী চৈতালির বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, সস্ত্রীক জিতেন্দ্র তিওয়ারি-সহ ১০জনের বিরুদ্ধে পুলিশের এফআইআর। অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করল আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ছিলেন আসানসোল পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি। সভায় উপস্থিত ছিলেন চৈতালির স্বামী, বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিও। এদিকে আসানসোলে বিজেপির কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে কুণাল ঘোষ বলেন, আগে আসানসোলের মানুষের কাছে গিয়ে নাকখত দিয়ে আসো। তারপর তোমার অন্য কথা শোনা হবে। আসানসোলে তোমার জন্য, তোমাদের জন্য যারা মারা গিয়েছে, তাদের জন্য সময় নেই তোমার? অমিত শাহর জুতো চাটার সময় আছে, কলকাতায় মিটিং করার সময় আছে, আর আসানসোলের নিহত-আহত মানুষজনের কাছে যাওয়ার সময় নেই?

প্রসঙ্গত, আসানসোলে শুভেন্দু অধিকারীর কম্বল বিলি অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক বালিকা-সহ ৩ জনের। মৃত চাঁদমণি দেবী আসানসোলের কাল্লার বাসিন্দা, ঝালি বাউড়ি ও ১২ বছরের প্রীতি সিংয়ের বাড়ি রামকৃষ্ণডাঙায়। পদপিষ্টের ঘটনায় ৮ জন আহত হন। স্থানীয়দের দাবি, কম্বল বিলি অনুষ্ঠানে আসানসোল পুরসভার প্রায় ৫টি ওয়ার্ড থেকে লোক এসেছিল। শুভেন্দু অনুষ্ঠানস্থল ছাড়তেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। উদ্যোক্তাদের তরফে ব্যবস্থাপনায় গাফিলতি ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এদিকে স্থানীয়দের দাবি, প্রায় সকলেই শুভেন্দুর সঙ্গে সভাস্থল ছাড়েন। কম্বল বিলি দেখভালের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরাও ভিড়ের চাপে দিশাহারা হয়ে পড়েন।  এদিকে জিতেন্দ্র-চৈতালির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তারা আইনি পথেই লড়াই করবে। জিতেন্দ্র ও চৈতালি দুজনেই আইনজীবী, তাই তাঁরা নিজেরাই লড়বেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে এই প্রসঙ্গে জিতেন্দ্র বলেন, এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। মৃত্যুকে সামনে রেখে নোংরা রাজনীতি করছে তৃণমূল। তাঁর দাবি, তৃণমূল পুলিশকে দিয়ে যা করাচ্ছে, তা ঠিক করছে না ভুল করছে, তা ঠিক করবে আসানসোলের মানুষ।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর করতে পারছে না বলে রাগ রয়েছে তৃণমূলের। উল্লেখ্য, হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে, শুভেন্দুর অধিকারীর বিরুদ্ধে নতুন করে কোনও এফআইআর করা যাবে না। আসানসোলের ঘটনার পর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল তৃণমূল। তবে শীর্ষ আদালত মামলা না শুনে হাইকোর্টে যাওয়ার কথা বলে। ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ফের আবেদন জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে।