মেলেনি আবাস যোজনার টাকা, বহুকষ্টে দিনগুজরান করছে ওঁরা

পুর এলাকার গরিব মানুষদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের 'সবার জন্য বাড়ি' (হাউস ফর অল) প্রকল্প রয়েছে। 

মেলেনি আবাস যোজনার টাকা,  বহুকষ্টে দিনগুজরান করছে ওঁরা

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: কারও ছয় মাস, কারও এক বছর আগে শুরু হয়েছে পুর এলাকায় বাড়ি তৈরির কাজ। অভিযোগ কিন্তু এক বারের বেশি টাকা পাননি অধিকাংশ পরিবার। যারফলে, এই ঠান্ডায় কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে বৈদ্যবাটী পুর এলাকার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বহু গরিব মানুষদের। অভিযোগ, কোনও পরিবার ছিটেবেড়া দিয়ে ঘর করে পলিথিন চাপিয়ে রয়েছে। আবার কেউ ক্লাবের জায়গায় সাময়িক ভাবে থাকছে। কোনও পরিবার ভাড়া থাকছে বিভিন্ন জায়গায়।
 
প্রশাসন সূত্রের খবর, পুর এলাকার গরিব মানুষদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের 'সবার জন্য বাড়ি' (হাউস ফর অল) প্রকল্প রয়েছে। বাড়ি তৈরিতে মোট খরচ ৩ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে উপভোক্তাকে দিতে হয় ২৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা কেন্দ্র চারটি কিস্তিতে দেয়। বৈদ্যবাটি পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩ টি ওয়ার্ডে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে অনুমোদিত হওয়া মোট ৭২০ টি বাড়ি তৈরির কাজ চলছে এই প্রকল্পের। প্রথম কিস্তিতে উপভোক্তা পরিবারগুলি ৫০ হাজার টাকা করে পায়। তা দিয়ে বাড়ির ভিত পর্যন্ত কাজ। তার পরে পরিবারকে দ্বিতীয় কিস্তিতে এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। 

উপভোক্তাদের অভিযোগ, আর কোনও টাকা না আসায় ৮-৯ মাস ধরে কাজ থমকে রয়েছে। যার ফলে চরম ভোগান্তির মুখে একাধিক পরিবার। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর লাহানগর কলোনির উপভোক্তা যমুনাবালা দাস বলেন, ''৫-৬ মাস হয়ে গেল, প্রকল্পের বাড়ি তৈরির জন্য ঘর ভেঙেছি। ৫০ হাজার টাকা পেয়েছি। ভিত পর্যন্ত কাজ হয়েছে। আর টাকা পাইনি। ক্লাব থেকে একটা ঘর দিয়েছে। সেই ঘরে দরজা নেই। পলিথিন টাঙিয়ে থাকছি।  ছেলে-বৌমা-নাতিকে নিয়ে ক্লাবে দরমার ঘরে থাকি। শীতে খুব কষ্ট পাচ্ছি সবাই। আমার হাত-পা ফুলে যাচ্ছে ঠান্ডায়।'' একই ওয়ার্ডের আর এক বাসিন্দা বলেন, ''৫০ হাজার টাকা পেয়ে ঘর শুরু করেছি। তার পর থেকে আর কোনও টাকা ঢোকেনি। একটা বর্ষা কেটে গিয়েছে। শীতে খুব কষ্ট পাচ্ছি।''

এদিকে এই ঘটনায় পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, কেন্দ্র এই প্রকল্পের টাকা সময়মতো পাঠাচ্ছে না। তার ফলেই এই পরিস্থিতি। ভুক্তভোগীরা পুরসভায় এসে দরবার করছেন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হরিপদ পাল বলেন, ''এই ওয়ার্ডে অনেক গরিব মানুষের বাস। বাড়ি তৈরির টাকার জন্য ওঁরা রোজ আমার কাছে আসছেন। সমস্যার কথা পুর-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো বলেন, এই প্রকল্পে ১৪-১৫ কোটি টাকা প্রয়োজন। কিন্তু কেন্দ্র যে ভাবে টাকা পাঠাচ্ছে, তা দিয়ে এত বাড়ি একসঙ্গে তৈরি করা সম্ভব নয়। কম টাকা আসায়, দ্রুত কাজ করা যাচ্ছে না। কাঁচাবাড়ি ভেঙে সেই জায়গায় ওই প্রকল্পের কাজের জন্য শীতে দুরবস্থার মধ্যে মানুষকে থাকতে হচ্ছে। খারাপ লাগছে।''