ভাঁড়ে মা ভবানী পাকিস্তান, আকাশছোঁয়া জ্বালানির দামে নাভিশ্বাস আমজনতার

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার ভ্রমণের জন্যই যা খরচ হয়েছে, তাতে দেশের আর্থিক ভাণ্ডার ফাঁকা হওয়ার জোগাড়।

ভাঁড়ে মা ভবানী পাকিস্তান, আকাশছোঁয়া জ্বালানির দামে নাভিশ্বাস আমজনতার

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: একে রামে রক্ষে নেই দোসর সুগ্রীব। হ্যাঁ ঠিক এমনই অবস্থা আমাদের পড়শি দেশ পাকিস্তানের। একদিকে টাকার দামের পতন অন্যদিকে জ্বালানির দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ভাঁড়ে মা ভবানী দশা পকিস্তানের। মুদ্রাস্ফীতির জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে সেদেশের অর্থনীতি। ডলার পিছু পাকিস্তানি টাকার মূল্য আড়াইশো টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে পেট্রল ও ডিজেলের দাম লিটারপিছু ৩৫ টাকা বেড়ে গেল। সব মিলিয়ে নাভিশ্বাস পাক আমজনতার।  

গত কয়েক মাস ধরেই মুদ্রাস্ফীতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে পাকিস্তানে। বেহাল দশা আমজনতার। রান্নার গ্যাস, ভোজ্য তেল অমিল ইসলামাবাদে। ১৫ কেজির আটার বস্তার দাম ১৫০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫০ টাকা। দু'সপ্তাহের মধ্যে আটার দাম বেড়েছে ৩০০ টাকা। মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও মাঝেমাঝে ব্যাহত হচ্ছে। তারপরেও চাহিদামতো জোগানে ঘাটতি দেখা গিয়েছে। যার জেরে শাহবাজ শরিফের সরকারের ভূমিকা ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভাব অনটনের এই অবস্থায় রাওয়ালপিন্ডিতে মুরগির খামারে সশস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনায় চুরি গিয়েছে ৫০ হাজার মুরগি। দেশের অন্যপ্রান্তেও এই ধরনের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। আসলে খাবারের প্রবল টানাটানিতে শেষ পর্যন্ত ছিনতাই, ডাকাতির পথ বেছে নিচ্ছেন বহু পাক নাগরিক। সব মিলিয়ে পাকিস্তানে জনজীবন কার্যতই বিপর্যস্ত, মূল্যবৃদ্ধির জাঁতাকলে পড়ে।

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার জানিয়েছেন, তেল ও গ্যাস কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব মেনেই ওই মূল্যবৃদ্ধি। তিনি জানান, জ্বালানির কৃত্রিম ঘাটতি ও জ্বালানি মজুতের ঘটনার মোকাবিলা করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সুপারিশ মেনে। উল্লেখ্য, আগের দিনই তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, আল্লাই পাকিস্তান বানিয়েছেন। তিনি যখন দেশ তৈরি করেছেন, তখন এই সংকট থেকে উদ্ধার করবেন তিনিই। দেশকে রক্ষা করে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন আল্লা। অন্যদিকে, আগামী মাসে দেশ চলবে কী করে, তাই-ই জানে না সরকার। সেখানেই আর্থিক খরচ নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল।

জানা গেল, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার ভ্রমণের জন্যই যা খরচ হয়েছে, তাতে দেশের আর্থিক ভাণ্ডার ফাঁকা হওয়ার জোগাড়। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নেশন-র তরফে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান ইমরান খানের হেলিকপ্টারে চেপে সফরে যাতায়াতের জন্য ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি রুপি খরচ হয়েছিল। তবে একা ইমরানই নন, পাকিস্তানের বাকি প্রধানমন্ত্রীরাও ক্ষমতায় থাকাকালীন বিলাসবহুল জীবনযাপন করেছেন।

২০০৮ সাল থেকে এখনও অবধি প্রধানমন্ত্রীদের ক্যাম্প অফিসের জন্যই ২৬ মিলিয়ন বা ২.৬ কোটি রুপি খরচ হয়েছিল। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজ়া গিলানীর তিনটি ক্যাম্প অফিস ছিল, দুটি লাহোরে, একটি মুলতানে। এই তিনটি ক্যাম্প অফিসের জন্যই ১০.৮ মিলিয়ন বা ১.৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রাক্তন স্পিকার রাজ়া পারভেজ আশরফের ক্যাম্প অফিসের জন্য ৫৫ লক্ষ রুপি খরচ হয়েছিল। নওয়াজ শরিফের ক্যাম্প অফিসের জন্য ৪৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল।