পুজো আর ৩০ দিন, অতিমারি কাটিয়ে ঢাকিরা ফিরছেন স্বাভাবিক ছন্দে

করোনাকালে কেউ রিক্সা কেউ টোটো চালিয়ে রুজি রুটি চালিয়েছেন। তবে এবার পরিস্থিতি বদলেছে। শরতে মেঘের খেলা আর কাশ ফুল ফুটতে দেখলে তাদের মন চঞ্চল হয়।

পুজো আর ৩০ দিন,  অতিমারি কাটিয়ে ঢাকিরা ফিরছেন স্বাভাবিক ছন্দে

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: অতিমারি অতীত! করোনার সেই চোখরাঙানি আর অতটা নেই। টানা দু'বছর পর সরকারি বিধিনিষেধের বেড়াজাল ভেঙে এবার পুজো হবে মহা ধুমধাম করে। ঢাকের পিঠে কাঠি পড়ার আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা! তার আগে অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছে ঢাকের বায়না। পুজোয় ডাক পড়ছে ঢাক বাজানোর জন্য। 

করোনা অতিমারি গত দু'বছর পুজোর উৎসব ফিকে করে দিয়েছিল। মন্ডপে গিয়ে ঢাক বাজানো হয়নি ব্যান্ডেন মানুষপুর ইডেন পার্ক এলাকার সব ঢাকির। কয়েক জনের ডাক পড়েছিল পাড়ার পুজোয়। কিন্তু পুজো সেরকম না হওয়ায় মন খারাপই ছিল। ইডেন পার্কের বাসিন্দা হরিপদ দাস,বাঁকু দাস,কাজল দাসেদের পূর্ব পুরুষরা বায়েন। বংশ পরম্পরায় ঢাক ঢোল বাজানোই তাদের পেশা। সারা বছর টুকটাক পুজোর বায়না হলেও দুর্গা পুজোর দিকে তাকিয়ে থাকেন তারা,এসময় ভালো উপার্জন হয়। দিল্লি, মুম্বাই,হায়দ্রাবাদ,নৈনিতাল,নাগপুর,সিকিম, অসম থেকে পুজোয় ঢাক বাজানোর ডাক আসে। কলকাতার বড় পুজোতে ঢাকের বরাত জোটে। তাই শারদোৎসবের দিকে তাকিয়ে থাকেন সারা বছর। গত দু'বছর অতিমারিতে বাইরেও যাওয়া হয়নি।

করোনাকালে কেউ রিক্সা কেউ টোটো চালিয়ে রুজি রুটি চালিয়েছেন। তবে এবার পরিস্থিতি বদলেছে। শরতে মেঘের খেলা আর কাশ ফুল ফুটতে দেখলে তাদের মন চঞ্চল হয়। পুজো মন্ডপে ঢাক আর কাঁসর ঘন্টার শব্দে মন কেমন করে। তাই পেটের টানে ঢাক বাজাতে গেলেও মনের টানও কম থাকে না। এবার ভিন রাজ্য থেকে ডাক এলেও কেউ যাবেন না ঠিক করেছেন। উত্তরবঙ্গ, কলকাতা এবং স্থানীয় মন্ডপে ঢাক বাজানোর বায়না হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। এবার পুজোর উন্মাদনা একটু বেশি হবে, তাই আগে থেকেই ঢাকের বুকিং শুরু হয়েছে।

দেড় মাস আগেই বিভিন্ন বারোয়ারি বায়না দিয়ে গেছে। অন্যান্যবারের তুলনায় এবারে ঢাকের দরও একটু বেশি। বাজার দর বেড়েছে তাই দর বাড়িয়েছেন ঢাকিরা। পুজোর চারদিন ঢাক বাজানোর জন্য একজন ঢাকি সাধারণত বারো তেরো হাজার টাকা পান এবার সেটাই পনেরো ষোলো হাজার। এরপর বকশিশ তো আছেই। বায়েনদের পেশা হল ঢাক বাজানো,বংশ পরম্পরা তারা ঢাক বাজিয়ে চলেছেন। পুজো মিটিয়ে যখন বাড়ি ফেরেন তখনই তাদের উৎসব শুরু হয়। তাই পুজোর দিনগুলোতে পরিবারকে সময় দিতে না পারলেও কোনও আক্ষেপ নেই তাঁদের।