ফের থমথমে বগটুই, CBI-এর অস্থায়ী ক্যাম্পে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের

লালন শেখের এই মৃত্যু ঘিরে নতুন করে শিরোনামে বগটুই। চড়ছে উত্তেজনার পারদ। সোমবারের ঘটনার পর জাতীয় সড়কে বিক্ষোভ দেখান লালনের পরিবার ও আত্মীয় স্বজন।

ফের থমথমে বগটুই, CBI-এর অস্থায়ী ক্যাম্পে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখ। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন ৩ ডিসেম্বর। ছিলেন রামপুরহাটে সিবিআইয়ের ক্যাম্প অফিসের সিবিআই হেফাজতে। সোমবার বিকেলে সেই লালন শেখের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরের শৌচাগারে গামছা গলায় জড়ানো অবস্থায় লালনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় সোমবার। সূত্রের খবর, লালনের গলায় ফাঁস থাকলেও শৌচাগারের মেঝেতে তাঁর পা ঠেকে ছিল। প্রশ্ন উঠছে কীভাবে তাহলে ফাঁস লাগল? এদিকে লালনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রামপুরহাটে। লালন শেখের এই মৃত্যু ঘিরে নতুন করে শিরোনামে বগটুই। চড়ছে উত্তেজনার পারদ। 

এদিকে লালন শেখের মৃত্যুর খবর প্রকাশ হতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। সিবিআই অস্থায়ী ক্যাম্পে লালনের মৃত্যুর পর তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয় রামপুরহাট হাসপাতালে। সেখানে এসে বুকভাঙা কান্নায় ভেঙে পড়ে লালনের পরিবার পরিজনেরা। স্বামীর আত্মহত্যা নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছেন লালনের স্ত্রী। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে আঙুল তুলে তিনি জানিয়েছেন, সিবিআই-ই তার স্বামীকে মেরেছে, সিবিআই ঘুষ খেয়েছে । ভাদু মরেছে,ভাদুর ভাইরা তাঁদের সবাইকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। কী কারণে লালনের মৃত্যু সেই নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ সিবিআই।

পুলিশের কাছে সিবিআই আধিকারিকরা জানিয়েছেন, লালন শেখ আত্মহত্যা করেছেন। যদিও এনিয়ে সরকারিভাবে কোনও তথ্য মেলেনি। লালনের মৃত্যুর খবর ছড়াতেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। তার কারণ ভাদু শেখের ছায়া সঙ্গী হবার সুবাদে লালন শেখ ওরফে ছোট লালনের একটা বিশাল প্রভাব ছিল রামপুরহাট এলাকায়। তাই লালন শেখের মৃত্যুতে যাতে আবার নতুন করে কোন অশান্তি না বাধে সেজন্য বগটুই ও পারিপার্শ্বিক এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়ন।  

লালন শেখের মৃত্যুতে যাতে আবার নতুন করে কোনও অশান্তি না বাধে সেজন্য বগটুই ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। সিবিআই এর অস্থায়ী ক্যাম্পও ঘিরে মোতায়েন বিশাল পুলিশ বাহিনী। রাতে সেখানে আসেন বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র নাথ ত্রিপাঠি। এদিকে লালন শেখের মৃত্যুতে সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্পে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। ক্যাম্প অফিসের বাইরের রাস্তায় পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে গো ব্যাক স্লোগানও দিতে থাকেন তাঁরা। 

লালন শেখের এই মৃত্যু ঘিরে নতুন করে শিরোনামে বগটুই। চড়ছে উত্তেজনার পারদ। সোমবারের ঘটনার পর জাতীয় সড়কে বিক্ষোভ দেখান লালনের পরিবার ও আত্মীয় স্বজন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায় তার জন্য রাতে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয় গ্রামে। যে হাসপাতালে লালনের ময়নাতদন্ত হচ্ছে, সেই রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। যে সিবিআই ক্যাম্পে লালনের মৃত্যু, তার সামনেও পুলিশি নিরাপত্তা আটসাঁট। রয়েছে কেন্দ্রীয়-নিরাপত্তাও। সোমবার রাতেই রামপুরহাটের এসডিপিও জানান, যে সমস্ত জায়গা তাঁদের কাছে উত্তেজনাপ্রবণ, সেই সমস্ত জায়গাতেই বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তার বলয়।

মঙ্গলবার সকালেই সিবিআইয়ের বিশেষ দল পৌঁছেছে রামপুরহাটের ক্যাম্প অফিসে। তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাও। গত মার্চে বগটুই গণহত্যার পর এবার লালন শেখের মৃত্যু নতুন করে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে ওই গ্রামের মানুষের। এর আগে ভাদু শেখের মৃত্যুর পর যে ভয়াবহতা দেখা গিয়েছিল, লালনের মৃত্যু নতুন করে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। লালন শেখের মৃত্যু ঘিরে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। লালনের পরিবার এই ঘটনার পরই দাবি করেছে, লালনকে মারধর করা হয়। যদিও সিবিআইয়ের দাবি,গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন লালন।